অর্থ
: সাধারণ অর্থে উচ্চারিত বা লিখিত শব্দ বা পদের তাৎপর্য। গূঢ়ার্থে শব্দের তিন
ধরনের অর্থ হয়—বাচ্যার্থ, লক্ষ্যার্থ এবং ব্যঙ্গ্যার্থ। 'নীরদ/জলদ' শব্দের বাচার্থ ('যে নীর/জল দান
করে')। কেবলমাত্র বাচ্যার্থ
দ্বারাই শব্দের প্রকৃত অর্থ সবসময় প্রকাশ করা হয় না। শব্দ ব্যবহারকারীর অভিপ্রায়ও শব্দের অর্থে
আরোপিত হয়ে থাকে ['নীরদ'/'জলদ' শব্দের প্রকৃত লক্ষ্যার্থ হল 'মেঘ']। ব্যঙ্গ্যার্থ বলতে
বোঝায় শব্দের ব্যঞ্জনা 'দিন শুরু' বলতে আক্ষরিকভাবে দিনের আরম্ভ না বুঝিয়ে কোনও নতুন যুগ বা পর্বের
বা কাজের শুরু বোঝাতে পারে। এটিকে বলা হবে শব্দের বাঙ্গ্যার্থ।
অতএব, বাচ্যার্থ অর্থাৎ শব্দের
সাধারণ তাৎপর্য বা অর্থ। লক্ষ্যার্থ অর্থাৎ যে তাৎপর্য বা অর্থ শব্দ ব্যবহারকারীর অভিপ্রায়কে
বোঝায়। লক্ষ্যার্থ শব্দের লক্ষণ শক্তি উদ্ভূত। ব্যাঙ্গ্যার্থ অর্থাৎ ব্যঞ্জনা। [ 'দিন ফুরোলো'র ব্যাঙ্গার্থ—'জীবন শেষ হতে চলল'] ।
অনেক সময় বাক্যে ব্যবহৃত হলে বাক্যগত ও অভিপ্রায়গত প্রভাবে
শব্দের অর্থে নানা পরিবর্তন ঘটে। অর্থাৎ অভিধান ও ব্যাকরণে 'আমার তো ঘরেও বেশ শীত লাগছে বাক্যটির অর্থ যাই দাঁড়াক না কেন, এর একটা অর্থ হতেই পারে 'ঘরের দরজা-জানলাগুলো বন্ধ করে দাও', বা 'আমার জন্যে একটা চাদর নিয়ে এসো'। নির্দিষ্ট প্রতিবেশের
প্রভাবে তৈরি এই অভিপ্রেত অর্থকে pragmatic meaning বা 'প্রয়োগিক অর্থ' বলা হয়। তা ব্যঞ্জনারই সমগোত্র।
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন