:::: সূচীপত্র ::::
রাজিয়া খান
(১৯৩৬-২০১১)

বাংলা ভাগ (১৯৪৭) হবার পর এপার বাংলায় যে কজন মহিলা ঔপন্যাসিকের নাম নিতে হয় তাঁদের অন্যতম রাজিয়া খান। তিনি পঞ্চাশ দশকে সাহিত্য সংস্কৃতির অনুরাগী প্রগতিবাদী লেখিকা হিসেবে সাহিত্যের অঙ্গনে এগিয়ে আসে লেখিকা হিসেবে তিনি প্রতিভার স্বাক্ষর রাখেন

বাংলাদেশের উপন্যাসে নারীভাবমূর্তি সৃষ্টিতে নারী লেখকদের মধ্যে তাই আকিমুন রহমান তাকে প্রথম দিককার একজন মনে করেন। তাঁর (আ.না.) ভাষায় প্রথমভাগের অন্তর্ভূক্ত করা যেতে পারে রাজিয়া খান, রিজিয়া রহমান, সেলিনা হোসেন প্রমুখকে। (একুশে প্রবন্ধ ৯৫ - আমাদের উপন্যাসে নারীভাবমূর্তি- আকিমুন রহমান ১৬৫ পৃ:)

তাঁর মৃত্যুর পর DW.com – তে, সাহিত্যিক শিক্ষাবিদ রাজিয়া খানের জীবন কর্ম নিয়ে স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে সাহিত্যিক সেলিনা হোসেন বললেন, ‘‘আমরা এমন একজনকে হারিয়েছি যিনি আমাদের সাহিত্যের সূচনা লগ্নে অর্থাৎ পঞ্চাশের দশকে যখন বাংলাদেশের সাহিত্যের একটি গতি নির্দিষ্ট হচ্ছিল, সেই সময়ের একজন প্রতিভাধর লেখক তিনি। তাঁর লেখা বটতলার উপন্যাস' পড়ে যে কেউ বুঝতে পারবেন যে তিনি কতোটা আধুনিক মনস্ক ছিলেন।” D.W

তাঁর প্রথম সৃজনশীলতার ঝোঁক প্রকাশিত হয় ছন্দে। আর ১৫ বছর বয়সেই পুরোদস্তুর উপন্যাস লিখতে শুরু করেন তিনি, আর ১৮ বছর বয়সেই লেখা হয়ে যায় বট তলার উপন্যাস। (মাসিক উত্তরাধিকার - পৌষ ১৪২০, রাজিয়া খান স্কলার অফ গ্রেট মেরিট-শাহ্‌নাজ মুন্নী, ১৩০ পৃ:)

তিনি খুব বেশি লিখে গিয়েছেন তেমন নয়, কিন্তু যা লিখে গেছেন তাতে জটিলায়তন নগরজীবন-অন্তর্গত ব্যক্তিমানুষের নৈঃসঙ্গ, বিচ্ছিন্নতা ও আত্মরক্তক্ষরণের শিল্পরূপায়ন করেছেন। তাঁর মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক উপন্যাস ১৯৯২ সালে  'দ্রৌপদী' এপার ওপার দুই বাংলায় সমাদৃত হয় এবং পরে ইংরেজি অনুবাদ প্রকাশিক হয় বাংলা একাডেমি থেকে।

সাহিত্যকর্ম :

গল্প :
বটতলার উপন্যাস (১৯৫৯)।
অনুকম্প (১৯৫৯)।

উপন্যাস :
প্রতিচিত্র (১৯৭৫)।
চিত্রকাব্য (১৯৮০)।
উপসংহার।

নাটক :
আবর্ত (পি..এন. পুরস্কৃত নাটক),
নোংরা নাটক: তিনটি একাঙ্কিকা।

অন্যান্য বই :
Argus under Anesthesia, cruel April.
সোনালী ঘাসের দেশ (বাংলা কবিতা)।
হে মহাজীবন (১৯৮৩)।
দ্রৌপদী (১৯৯২)।
পাদবিক (১৯৯৬)।
তমিজুদ্দিন খানের আত্মকথা (বাংলা অনুবাদ)।
Multi Dimensional vision in George Eliot, A Different spring.
জহির রায়হানের 'আরেক ফাল্গুন' উপন্যাসের ইংরেজি অনুবাদ ।

তিনি ইংল্যান্ড থেকে ফিরে তখনকার পাকিস্তান অবজারভার (স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ অবজারভার) পত্রিকায় সম্পাদকীয় বিভাগে কাজ করেন। এখানে তাঁর লেখা ব্যঙ্গ কলাম- 'কালচার কেটল' তীক্ষ্ণ লেখনীর জন্য জনপ্রিয় হয়

রাজিয়া খান তাঁর সাহিত্য কর্মের জন্য ১৯৭৫ সালে বাংলা একাডেমী পুরস্কা লাভ করেন'আর্বত' নাটকটি পি..এন. পুরস্কার প্রাপ্ত হয়১৯৯৭ সালে একুশে পদকে ভূষিত করা হয় (শিক্ষার জন্য)