১৪
কৃষ্ণচূড়া
১
এই যে কুসুম শিরো পরে, পরেছি যতনে,
মম শ্যাম-চূড়া-রূপ
ধরে এ ফুল রতনে !
বসুধা নিজ কুন্তলে পরেছিল কুতুহলে
এ উজ্জ্বল মণি,
রাগে তারে গালি দিয়া, লয়েছি আমি কাড়িয়া—
মোর কৃষ্ণ-চূড়া কেনে পরিবে ধরণী?
২
এই যে কম মুকুতাফল, এ ফুলের দলে,—
হে সখি, এ মোর আঁখিজল, শিশিরের ছলে!
লয়ে কৃষ্ণচূড়ামণি, কাঁদিনু আমি, স্বজনি,
বসি একাকিনী,
তিতিস্থ নয়ন-জলে
; সেই জল এই দলে
গলে পড়ে শোভিতেছে, দেখ্ লো কমিনি !
৩
পাইয়া এ কুসুম রতন—শোন্ লো যুবতি,
প্রাণহরি করিনু স্মরণ—স্বপনে যেমতি !
দেখিনু রূপের রাশি মধুর অধরে বাঁশী,
কদমের তলে,
পীত ধড়া স্বর্ণরেখা, নিকষে যেন লো
লেখা,
কুঞ্জশোভা বরগুঞ্জমালা দোলে গলে !
৪
মাধবের রূপের মাধুরী, অতুল ভুবনে—
কার মনঃ নাহি
করে চুরি, কহ, লো ললনে ?
যে ধন রাধায় দিয়া, রাধার মনঃ কিনিয়া
লয়েছিলা হরি,
সে ধন কি শ্যামরায়, কেড়ে নিলা
পুনরায়?
মধু কহে,
তাও কভু হয় কি, সুন্দরি?
--------xXx--------
সূত্র : মধুসূদন রচনাবলী-সব্যসাচী রায় (সম্পাদনায়)